ভারতে থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও কয়েকদিন ধরে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে আতংক ছড়িয়েছে নদী সংলগ্ন ৭৯টি চরে মানুষের মাঝে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে হু হু করে বাড়ছে তাতে যে কোন সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টানা কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ডুবে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদকৃত ফসলের ক্ষেত। তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে এলাকার বাসিন্দা মহিবুর রহমান বলেন, আমরা নদী পাড়ের মানুষ সব সময় আতংকে থাকি। বন্যা, খরা নদী ভাঙ্গণের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচাজ নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তবে পানি এখনও বিপদসীমার ৭৫সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে, তবুও আমরা সতর্ক আছি।